হেফাজত ইসলামের সাবেক আমির শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর ঘটনায় করা পরিবারের মামলায় সংগঠনটির বর্তমান আমির জুনাইদ বাবুনগরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ সুপার ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল গতকাল মঙ্গলবার হাটহাজারীর আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম (হাটহাজারী মাদরাসা) এবং ফটিকছড়ির বাবুনগর মাদরাসায় গিয়ে হেফাজত আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে পিবিআই কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, হাটহাজারী মাদরাসায় জুনাইদ বাবুনগরীসহ ১৫ জনের সঙ্গে এবং বাবুনগর মাদরাসায় আরো ১২ জনের সঙ্গে কথা বলেছি। আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে পিবিআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্তের স্বার্থে বেশি কিছু বলা যাবে না। কবে নাগাদ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হতে পারে এমন প্রশ্ন করা হলে পুলিশ সুপার ইকবাল বলেন, ‘আদালতের বেঁধে দেওয়া এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার চেষ্টা করব। যদি পারা না যায়, আমরা সময় প্রার্থনা করব।’আরেক প্রশ্নে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, যে আর্জি করা হয়েছে, সেখানে লাশ তোলার মতো কিছু নেই। অবহেলাজনিত মৃত্যু ৩০৪ ধারায় মামলা, সেখানে দেহে আঘাত থাকার মতো কিছু নেই।
জানতে চাইলে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন,‘তদন্ত দল যা কিছু জিজ্ঞেস করেছেন আমরা তাদের বলেছি। আমাদের যা বক্তব্য ছিল আমরা সংবাদ সম্মেলনে বলে দিয়েছি।’
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হাটহাজারী মাদরাসার দীর্ঘদিনের মহাপরিচালক আহমদ শফী। মৃত্যুর আগের দিন তুমুল হট্টগোলের মধ্যে শফী মাদরাসার মহাপরিচালকের পদ ছাড়েন, তার ছেলে মাদরাসার সহকারী পরিচালক আনাস মাদানিকেও বহিষ্কার করা হয়। শফীর মৃত্যুর দিন আনাস মাদানি ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আগের দিনের ‘অনাকাঙ্খিত’ ঘটনার কারণে ‘টেনশনের’ কারণে ‘হার্টফেল’ করে তার বাবা মারা গেছেন। হেফাজতের বিবাদের মধ্যে গত ১৭ ডিসেম্বর শফীর শ্যালক মো. মইন উদ্দিন চট্টগ্রামের আদালতে মামলা করেন। এতে অভিযোগ করা হয়, আহমদ শফীকে ‘মানসিক নির্যাতন করে’ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে মাওলানা মো. নাসির মুনিরকে। আর দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতার জন্য আলোচনায় আসা হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, কেন্দ্রীয় নেতা মীর ইদ্রিস, হাবিব উল্লাহ, আহসান উল্লাহ, জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর নামও রয়েছে আসামির তালিকায়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দেয়।
Leave a Reply