করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমাতে কঠোর লকডাউন আরো এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অনিশ্চয়তা ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। এরই মাঝে সামনে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। সংশ্লিষ্ট অনেকের মনে প্রশ্ন দানা বেঁধেছে, কোন পথে ধাবিত হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা?
শিক্ষাবিদরা বলছেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর সরকার মার্চ মাস থেকেই খোলার চিন্তা করেছিল। তবে হুট করে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যাওয়ায় খোলার সিদ্ধান্ত ঈদের পরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় এখনই সবাইকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ দিয়েছেন তারা। অন্যথায় ঈদের পরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। দুশ্চিন্তা না করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া ও শিক্ষকদের তদারকি বাড়ানোর পরামর্শ দেন তারা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ কমাতে লকডাউন তেমন কার্যকর হবে না, যদি নিয়ম মানা না হয়। এক্ষেত্রে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কঠোর হতে হবে। সরকারকেও সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, করোনায় ছাত্রছাত্রীদের ঝুঁকির মধ্যে না ফেলার নীতি নিয়েই সরকার এগিয়ে চলেছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রথম প্রয়োজন সবার মধ্যে সমন্বয়। বর্তমানে সংক্রমণের হার বেশি দেখতে পাচ্ছি আমরা। এ অবস্থায় ঝুঁকির মধ্যে ফেলা ঠিক হবে না।
জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক ইকরামুল কবির বলেন, ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আমাদের এটাও দেখতে হবে শিক্ষার্থীরা কতটুকু পড়াশোনার আওতায় আছে। সেটি যথাযথ মেইনটেন হচ্ছে কি না, এটাও নিশ্চিত করতে হবে। পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে যেতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের দুশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, পরিস্থিতি হঠাৎ খারাপ হয়েছে। এতে আমাদের কারো হাত নেই। শিক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই।
তাদের যেটুকু পড়ানো হবে; যা সিলেবাসে থাকবে, এখন থেকেই সেখানে তারা মনোযোগ দিলে পরবর্তী ধাপে বা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করবে। আমাদের নির্দিষ্ট সিলেবাস তারা কমপ্লিট করতে পারলেই তাদের থেকে প্রত্যাশিত ফল পাব। মূলত এর ভিত্তিতেই একজন শিক্ষার্থী তার পরবর্তী পড়াশোনা এগিয়ে নেবে।’
প্রাথমিক শিক্ষাক্রম সদস্য ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় পাঠপরিকল্পনায় পরিবর্তন আসছে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে একদিন স্কুল শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের কাছে কাজ দেবেন। শিক্ষার্থীদের পাঠে রাখতে আমরা সবকিছুই করব।’
Leave a Reply