বছরের শুরুতেই জনশক্তি রফতানিতে সুদিন ফিরে পাচ্ছে বাংলাদেশ। ক্রমেই হাওয়া লাগছে জনশক্তি রফতানির পালে। করোনাকালীন অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে গত বছরের ডিসেম্বরে ১ লাখ ৩১ হাজার ৩১৬ জন বিভিন্ন দেশে গেছেন চাকরি করতে। যার মধ্যে ১১ হাজার ৫৬৪ জন নারী কর্মী, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ জনশক্তি রফতানি।
করোনাকালীন অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে গত বছরের ডিসেম্বরে ১ লাখ ৩১ হাজার ৩১৬ জন বিভিন্ন দেশে গেছেন চাকরি করতে। যার মধ্যে ১১ হাজার ৫৬৪ জন নারী কর্মী, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ জনশক্তি রফতানি।
জনশক্তি রফতানির চিত্র
করোনার বছর ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছেন মোট ৬ লাখ ১৭ হাজার ২০৯ জন কর্মী। বিএমইটির তথ্য বলছে, গত বছরের জানুয়ারি মাসে দেশের বাইরে কাজ নিয়ে গেছেন ৩৫ হাজার ২৩২ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে এ সংখ্যা ৪৯ হাজার ৫১০ জন। তার পরের মাসে এ সংখ্যা হচ্ছে ৬১ হাজার ৬৫৩ জন। এরপরের মাসে করোনা বাড়ায় জনশক্তি রফতানির গতি কমে এপ্রিল মাসে হয় ৩৪ হাজার ১৪৫ জন কর্মী। মে মাসে এ সংখ্যা ১৪ হাজার ২০০ জন, জুন মাসে বেড়ে দাড়ায় ৪৮ হাজার ৫৬৭ জন। এছাড়া জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরে বিদেশ গেছেন যথাক্রমে ১২৩৮০ জন, ১৯৬০৪ জন, ৪২০০৮ জন, ৬৫২৩৩ জন ও ১০২৮৬১ জন। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি কর্মী বিদেশ গেছেন কাজের জন্য। এ সংখ্যা হচ্ছে ১৩১৩১৬ জন।
করোনার বছর ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছেন মোট ৬ লাখ ১৭ হাজার ২০৯ জন কর্মী। বিএমইটির তথ্য বলছে, গত বছরের জানুয়ারি মাসে দেশের বাইরে কাজ নিয়ে গেছেন ৩৫ হাজার ২৩২ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে এ সংখ্যা ৪৯ হাজার ৫১০ জন।
দেশভিত্তিক বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানি
বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির সবচেয়ে বড় বাজার মধ্যপ্রাচ্য। মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ বাংলাদেশি কাজ নিয়ে যান সৌদি আরবে। বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি)-এর ২০২১ সালের তথ্য বলছে, সৌদি আরবে কাজ নিয়ে সৌদি গেছেন ৪ লাখ ৫৭ হাজার ২২৭ জন। অর্থাৎ এ হার হচ্ছে বিশ্বব্যাপী জনশক্তি রফতানির ৭৪ শতাংশ। একইভাবে ২৯২০২ জন কর্মী গেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। যা সৌদি আরবের পরের স্থানে রয়েছে বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির দেশ আমিরাত। এরপরের দেশগুলো হচ্ছে কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন, লেবানন, জর্ডান, লিবিয়া, সুদান, মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি, জাপান, ব্রুনাই, মরিশাস ও ইরাক।
এদিকে ২০২১ সালে ৮০১৪৩ জন বাংলাদেশি নারী বিদেশে গেছেন কাজ নিয়ে। বিএমইটি)-এর ২০২১ সালের তথ্য মতে, জানুয়ারিতে নারী কর্মী গেছেন ৪৬৬৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৬৩৮২ জন। এমনকি মার্চ মাসে ৮২৯৭ জন, এপ্রিলে এ সংখ্যা ৫২৩৯ জন, মে তে ৪২৩৮ জন। জুন মাসে এ সংখ্যা ৬৯০১ জন, জুলাই মাসে ১৬৯১ জন, আগস্ট মাসে ৩৬৫৯ জন নারী কর্মী। এমনকি সেপ্টেম্বর মাসে গেছেন ৮০৫৩ জন, তার পরের মাস অক্টোবরে ৮ ৪৮৮ জন এবং নভেম্বর মাসে বিভিন্ন দেশে কাজ নিয়ে গেছেন ১০৯৬২ জন নারী কর্মী। তবে ডিসেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি নারীকর্মী বি;শে গেছেন। এ সংখ্যা হচ্ছে ১১৫৬৪ জন। এসব নারীকর্মীদের মধ্যে সবচেয়ে সৌদি আরবে গেছেন ৪৬৩৬১ জন। সৌদি আরবের পরে যে দেশগুলো বাংলাদেশ বেশি নারীকর্মী গেছেন সে সব দেশ হচ্ছে, জর্ডান ও ওমান। এই দুই দেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা হচ্ছে যথাক্রমে ১১৬৯৭জন ও ৭৬৪৫ জন।
২০২১ সালে ৮০১৪৩ জন বাংলাদেশি নারী বিদেশে গেছেন কাজ নিয়ে। বিএমইটি)-এর ২০২১ সালের তথ্য মতে, জানুয়ারিতে নারী কর্মী গেছেন ৪৬৬৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৬৩৮২ জন। এমনকি মার্চ মাসে ৮২৯৭ জন, এপ্রিলে এ সংখ্যা ৫২৩৯ জন, মে তে ৪২৩৮ জন। জুন মাসে এ সংখ্যা ৬৯০১ জন, জুলাই মাসে ১৬৯১ জন, আগস্ট মাসে ৩৬৫৯ জন নারী কর্মী।
প্রবাসিদের পাঠানো রেমিটেন্সের গতি
করোনার কারণে প্রবাসিদের পাঠানো রেমিটেন্সের গতি হয়ে পড়ে খুবই নিম্ন। ২০২১ সালের টানা পাঁচ মাস রেমিটেন্স কমার পর গত বছরের ডিসেম্বরে কিছুটা ঊর্ধ্বগতি ছিল রেমিটেন্সের সূচক। তবে চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি মাসে দেখা যাচ্ছে প্রবাসী আয় প্রবাহের ঊর্ধ্বমুখী। অর্থাৎ ২০২২ জানুয়ারি মাসের রেমিট্যান্স ২০২১ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে প্রবাসিরা দেশে রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ১৭০ কোটি ৪৪ লাখ (১.৭৪ বিলিয়ন) ডলার। তবে গত বছরের একই মাসের (২০২১ সালের জানুয়ারি) তুলনায় এবার রেমিট্যান্স কমেছে ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিটেন্স সংক্রান্ত প্রতিবেদন বলছে, ২০২১ সালে প্রবাসিদের পাঠানো রেমিটেন্সের মোট পরিমাণ হচ্ছে ২২০৭ কোটি ডলার। এর আগের সর্বোচ্চ রেমিটেন্স ছিল ২০২০ সালে। যার পরিরমাণ ২১৭৪ কোটি ডলার। এছাড়া ২০১৯ সালে রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ১৮৩৩ কোটি ডলার। ২০১৮ সালে ছিল ১৫৫৫ কোটি ডলার। ২০১৭ সালে ১৩৫৩ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছে বাংলাদেশি প্রবাসীরা। এমনকি ২০১৬ সালে প্রবাসিদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ১৩৬১ কোটি ডলার, ২০১৫ সালে ১৫৩১ কোটি ডলার। এরপরের বছর ২০১৪ সালে ১৪৯২ কোটি ডলার রেমিটেন্স ছিল।
২০২২ জানুয়ারি মাসের রেমিট্যান্স ২০২১ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে প্রবাসিরা দেশে রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ১৭০ কোটি ৪৪ লাখ (১.৭৪ বিলিয়ন) ডলার।
সরকারের রেমিটেন্স লক্ষ্যমাত্রা
চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) সরকারের নির্ধারিত রেমিট্যান্সের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২৬ বিলিয়ন ডলার। প্রথম সাত মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১১ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার যা সরকারি লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৪৫.৯২ শতাংশ। তবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রেমিট্যান্স বাড়াতে আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
Leave a Reply